ভাইকে দেখার আগেই মৃত্যুর সাথে দেখা


এইচএফ ডেস্ক: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ইসলামী গবেষক মাওলানা বখতিয়ার উদ্দিন নগরীর বেসরকারী একটি হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ভোর ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনও আশংকাজনক। জরুরি ভিত্তিতে রাতে তার মস্তিষ্কে একদফা অস্ত্রোপাচার করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শরীরে দেওয়া হয় ৪ ব্যাগ রক্ত। 

এদিকে ভাইয়ের দুর্ঘটনার খবর শুনে তড়িঘড়ি করে স্কুলে গিয়ে ছুটি নিয়ে শহরের হাসপাতালে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল বড় বোন তাহমিনা বেগমের (৪০)। তাঁর আগেই বাঁশখালীর সাধনপুরে আরেক দুর্ঘটনায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তাহমিনা। মাওলানা বখতিয়ার উদ্দিন চট্টগ্রামের অন্যতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়ার তফসির বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। এর আগে তিনি ঢাকার কাদেরিয়া তৈয়বিয়া মাদ্রাসার আরবী প্রভাষক ছিলেন। এছাড়া তিনি ঢাকার গাউছুল আযম মসজিদের খতিব ও বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে আলোচক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ইসলামী বক্তা হিসাবে সারাদেশে তার বিশেষ খ্যাতি রয়েছে।

বখতিয়ারের বোন তাহমিনা বাঁশখালী রায়ছটা-প্রেমাশিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। নগরীর বাকলিয়া এলাকার বাসা থেকে সিএনজি টেক্সিযোগে বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রামের বাইন্নাপাড়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস তাদের টেক্সিটি চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। তাহমিনার মৃত্যুর খবর যখন স্বজনদের কাছে পৌঁছে তখন ছোটভাই হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। প্রচুর রক্তক্ষরণ ও মাথায় প্রচন্ড আঘাতের কারণে ডাক্তাররাও মাওলানা বখতিয়ারের অবস্থা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।

বোনের মৃত্যু ও ভাইয়ের মারাত্মক দুর্ঘটনার খবর তাদের গ্রামের বাড়ি আনোয়ারা বরুমছড়ায় পৌঁছলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন মা-বাবা। তাহমিনার লাশ বাঁশখালীর রায়ছটা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে রাত সাড়ে ৮টায় জানাযার নামাজ শেষ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযায়ও ছিল হাজারো শোকার্ত মানুষের ঢল। এদিকে নগরীর প্রবর্তক এলাকায় গুরুতর আহত মাওলানা বখতিয়ারকে এক নজর দেখতে দিনভর তার শত শত ছাত্র, ভক্ত-অনুরক্ত ভিড় জমায়। মসজিদ, খানকায় চলছে দোয়া মাহফিল।


সূত্র: দৈনিক আজাদী

আমাদের ফেসবুক ঠিকানা: Click Here

Comments